প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: 'আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে কর, শুল্ক্ক ও ভ্যাটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। স্থানীয় শিল্পের উৎপাদকদের জন্য করপোরেট করে ছাড়, আমদানি পর্যায়ে আগাম কর দেওয়া থেকে অব্যাহতির মতো সুখবর যেমন থাকছে, তেমনি থাকছে এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় সক্ষম হওয়ার প্রস্তুতির খবরও। বাণিজ্য উদারীকরণের পথ থেকে পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছুটা পিছিয়ে আসছে এনবিআর। কারণ, আমদানি করা অনেক প্রস্তুত পণ্যে বাড়তি শুল্ক্ক বসছে। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সাশ্রয়ী হতে বিলাসপণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করা হবে বাজেটে। অন্যদিকে, নতুন করে কিছু পণ্য ও সেবায় ভ্যাট আরোপ করবে এনবিআর। বাড়ানো হবে ভ্যাটের আওতাও। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের থেকে বেশি রাজস্ব সংগ্রহের কৌশল নেওয়া হচ্ছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।'
-সূত্র জানায়, বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর কমিয়ে ১২ শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে এই হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৩০ শতাংশ। সরকার দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে করপোরেট কর হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিনিয়োগ বেড়ে নতুন করদাতা সৃষ্টি হলে মোট রাজস্বে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে এনবিআর। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিও সরকারের লক্ষ্য। তবে বিভিন্ন খাতে রপ্তানির বিপরীতে সরকার যে নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে, সেখানে বরাদ্দ কমতে পারে। বর্তমানে ৩ থেকে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয় সরকার। রপ্তানি আয়ের ওপর উৎসে করের হার বাড়তে পারে। এ হার বর্তমানের দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে।
'এদিকে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ কোনো সুখবর থাকছে না। করমু
ক্ত আয় সীমা ৩ লাখ টাকা অপরিবর্তিত থাকছে। আবার ব্যাংক হিসাবে জমার বিপরীতে আবগারি শুল্ক্ক বাড়ানো হচ্ছে। ১০ লাখ টাকা বেশি যাদের আমানত বা ঋণ আছে, তাদের বেশি পরিমাণে আবগারি শুল্ক্ক দিতে হবে। অন্যদিকে, সব করদাতা শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (টিআইএন) রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে বিশেষ ছাড় দেবে এনবিআর। যেসব টিআইএনধারী গত কর বছরে বা তার আগেও আয়কর রিটার্ন জমা দেননি, তাঁরা কোনো ধরনের জরিমানা ছাড়াই আগামী কর বছরে রিটার্ন দিতে পারবেন। তবে পরবর্তী বছর থেকে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা বা অন্য কোনো ধরনের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। একই সঙ্গে বেশকিছু ক্ষেত্রে সেবা নিতে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র জমা দেওয়ারও বিধান আসছে।'
-আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানের আমদানি পর্যায়ে আগাম কর দেওয়ার বিধান প্রত্যাহার করা হতে পারে। পরিশোধিত আগাম কর সমন্বয়ের জটিলতা দূর করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগাম করের অর্থ রিফান্ড বা ফেরত দিতে হচ্ছে। সেজন্য আমদানিনির্ভর কাঁচামাল ব্যবহারকারী ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠানের আগাম করের বিধান প্রত্যাহার করা হতে পারে। বিশেষ করে সিমেন্ট, সিরামিক, বেভারেজ, ভোজ্যতেল, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম খাতসহ বিভিন্ন খাতের জন্য এ সুবিধা দেওয়া হতে পারে।
শুল্ক্ক ও ভ্যাটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে
'বিলাসপণ্য এবং জরুরি নয় এমন পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে আগামী বাজেটে। ইতোমধ্যে এনবিআর ফল, ফুল, প্রসাধনী ও আসবাবপত্র খাতের ১৩৫টি এইচএস কোডের পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সম্পূরক শুল্ক্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করেছে। বাজেটে আরও কিছু পণ্যে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্য, গাড়ি, প্রসাধনী, পোশাক-পরিচ্ছদ আমদানি নিরুৎসাহিত করা হবে। আবার দেশে এ ধরনের পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে সরকারের।'
যেসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয়ভাবে ভ্যাট নিবন্ধনের উপযুক্ত, তাদের কেন্দ্রীয় নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হবে। ভ্যাটের জরিমানা নেওয়া হবে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের। অনলাইনে ভ্যাটের রিটার্ন দাখিল, ইএফডি মেশিন ব্যবহার উদ্বুদ্ধকরণের উদ্যোগ থাকবে বাজেটে।
'উৎসে করে পরিবর্তন :আগামী বাজেটে ক্যাটারিং, ক্লিনিং, কালেকশন অ্যান্ড রিকভারি, বেসরকারি নিরাপত্তা সেবা, জনশক্তি সরবরাহ, ক্রিয়েটিভ মিডিয়া, জনসংযোগ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, কুরিয়ার সার্ভিস প্যাকিং এবং শিফটিং পরিষেবার বিলের ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর আরোপ হতে পারে।'