প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য বিশেষ কিছু সময় ও মৌসুম দিয়েছেন, যে সময়ে বান্দা অধিক ইবাদত ও ভালো কাজ করে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। মুমিনের জন্য এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। অতীতে ঘটে যাওয়া ছোট-বড় গুনাহ মার্জনা করানোর সুবর্ণ সুযোগ বটে। এই বরকতময় সময়ের মধ্যে একটি হলো মহররম ও আশুরা।'
'বরকতময় মাস'
'এ মাসের রোজা'
'রোজার জন্য রমজানের পর যে মাসকে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মাস বলা হয়েছে তা হচ্ছে মহররম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে আল্লাহর মাস মহররমের রোজা...। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬৪৫) 'ইবনে রজব (রহ.) বলেন,'আমাদের পূর্বসূরিরা তিন দশককে বেশি গুরুত্ব দিতেন—রমজানের শেষ ১০ দিন, জিলহজের প্রথম ১০ দিন এবং মহররমের প্রথম ১০ দিন।' (লাতাইফুল মাআরিফ)'
'আশুরার তাৎপর্য'
'আশুরার ফজিলত'
'এই বিশেষ দিনের কিছু ফজিলত রয়েছে। বিভিন্ন হাদিসে তা বর্ণিত হয়েছে। আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে আমি আশা পোষণ করি যে তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ) ক্ষমা করে দেবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৫২) 'ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এই দিন ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো মাসকে এই মাসের (রমজান) তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করে রোজা রেখেছেন বলে আমার জানা নেই।' (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৫২)'
'আশুরার রোজার হুকুম'
'কোন দিন রোজা রাখব'
'মহানবী (সা.) ১০ মহররমের সঙ্গে ৯ বা ১১ মহররম মিলিয়ে দুটি রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ৯ তারিখে রাখতে পারলে ভালো। কারণ হাদিসে ৯ তারিখের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) যখন আশুরার রোজা রাখছিলেন এবং অন্যদের রোজা রাখতে বলেছিলেন তখন সাহাবারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল!
'পবিত্র আশুরার তাৎপর্য ও করণীয়'
এই দিনকে তো ইহুদি-নাসারারা সম্মান করে। তখন নবীজি এই কথা শুনে বললেন, ইনশাআল্লাহ, আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও রোজা রাখব। বর্ণনাকারী বললেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকাল হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৬) 'এ জন্য ইবনে আব্বাস রা. বলতেন, তোমরা ৯ ও ১০ তারিখ রোজা রাখো এবং ইহুদিদের বিরোধিতা করো।' (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৫)'
'শিশুরাও এই রোজা রাখত'
'তাওবার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া'
'তাওবা-ইস্তিগফার যেকোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ আমল। তবে কিছু কিছু সময় এমন রয়েছে, যখন তাওবার পরিবেশ বেশি অনুকূল হয়। বান্দার উচিত সেই প্রত্যাশিত মুহূর্তগুলো কদর করা। মহররমের এ মাসটি, বিশেষ করে ১০ তারিখ এমনই এক মোক্ষম সময়। এদিন তাওবা কবুল হওয়া, নিরাপত্তা এবং অদৃশ্য সাহায্য লাভ করার কথাও আছে। এ জন্য এই সময়ে এমন সব আমলের প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত, যাতে আল্লাহর রহমত বান্দার দিকে আরো বেশি ধাবিত হয়। এক সাহাবি নবীজির কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! রমজানের পর আপনি কোন মাসে রোজা রাখতে বলেন? নবী (সা.) বলেন, তুমি যদি রমজানের পর রোজা রাখতে চাও তাহলে মহররমে রোজা রাখো। কেননা মহররম হচ্ছে আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন এক দিন আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা (অতীতে) অনেকের তাওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও অনেকের তাওবা কবুল করবেন।' (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৪১)