প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে গড়েছেন ইতিহাস। রক্তক্ষয়ী সেই যুদ্ধে অন্যান্য পেশাজীবীর মতো দেশের আইনজীবীরা ঢেলে দিয়েছেন বুকের তাজা রক্ত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ভবন উদ্বোধনের দিনে সেসব শহীদ আইনজীবীর নামফলক দেখতে না পেয়ে আক্ষেপ করেছিলেন খোদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।'
/ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে স্মৃতিস্মারক /
'সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর সেই প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে উদ্যোগ নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশা পূরণের। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মারকস্তম্ভের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, স্মারকস্তম্ভে ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর সংবিধানে স্বাক্ষররত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বক্তৃতার ছবি মুর্যাল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত স্মারকস্তম্ভে সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং সংবিধানের ৯৪ এবং ৯৫ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করা হয়েছে।'
/ স্মারকসৌধ উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা /
'এছাড়াও নাম রয়েছে, নোয়াখালীর নরেন্দ্রনাথ ভৌমিক, রায় সাহেব নগেন্দ্র কুমার শূর, মনীন্দ্র কুমার সরকার, নরেন্দ্র কুমার নাথ, কুমিল্লার অতীন্দ্রনাথ ভদ্র, কাজী আবদুল মালেক, প্রসন্ন কুমার ভৌমিক, যতীন্দ্র কুমার ভদ্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আবু শামস জহুরুল আলম, নওগাঁর আবদুল জব্বার, মো. আবু ফারুক চৌধুরী, আবদুল জব্বার, নগেন্দ্রনাথ নন্দী, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সফিউদ্দিন, যশোরের সুশীল কুমার রায়, সৈয়দ আমীর আলী, আবদুর রশিদ খাঁন, কুষ্টিয়ার আবদুল গণি, ঝিনাইদহের শেখ হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরার কাজী মোহাম্মদ মছরুর আহমেদ (ক্যাপ্টেন কাজী), নড়াইলের মামুনুর রশিদ, ঝালকাঠি মহিউদ্দিন খান, জাহাঙ্গীর হোসেন, পিরোজপুরের রায় বাহাদুর ললিতকুমার বল, সুনামগঞ্জের সুনাহার আলী, দিনাজপুরের সুমঙ্গল কুমার কুণ্ডু, মো. হাবিবুর রহমান, নেত্রকোনার অখিল চন্দ্র দাস, ফজলুল হক ও লক্ষণ চন্দ্র দাস। দীর্ঘ ৫০ বছর ৭ মাস ১০ দিন পর আজ শুক্রবার (২৮ জুলাই) শহীদ আইনজীবীদের
'দীর্ঘ ৫০ বছর পর সুপ্রিম কোর্টে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশা পূরণ হলো'
নামফলক নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে স্মৃতিস্তম্ভের 'স্মৃতি চিরঞ্জীব'র উদ্বোধনে সুপ্রিম কোর্টে আসেন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনকালে তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। 'স্মৃতি চিরঞ্জী'র উদ্বোধন উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি শহীদ আইনজীবীদের নামফলকের বিষয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছর পরে হলেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে পারার বিষয়টি জাতি হিসেবে এবং আইনজীবী হিসেবে আমাদের সকলের জন্য গর্বের।' সমিতির সম্পাদক আব্দুন নুর দুলাল বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেছেন। এটি আমাদের জন্য একটি বড় পাওয়া। স্মৃতিস্তম্ভে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশা অনুসারে শহীদ আইনজীবীদের নামও খোদাই করে উল্লেখ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে আজকের দিনটিও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।'